স্বপন কুমার বর্মন,বিশ্বম্ভরপুর
ঈদের ছুটিতে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুরে দৃষ্টিনন্দন হাওরবিলাস, পাহাড় বিলাসসহ পর্যটন স্পটগুলোতে স্থানীয়সহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকদের ঢল নেমেছে।ঈদের দিন থেকে এ পর্যন্ত ঈদের ছুটির দিনগুলোতে প্রতিদিন স্থানীয় সহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আগত নারী,পুরুষ, আবাল বৃদ্ধবনিতাদের আগমনে স্পটগুলো আনন্দঘন পরিবেশে মুখরিত হয়ে উঠছে।
সকাল থেকেই পর্যটকদের আগমন শুরু হয়, বিকালে ভিড় বাড়তে থাকে এবং প্রায় রাত ৯-১০টা পর্যন্ত ভিড় থাকে। বিশেষ করে ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয় রাজ্যের নীল পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত পাহাড় বিলাসে ও উপজেলা প্রশাসন প্রাঙ্গণে খরচার হাওর পাড় মনোরম পরিবেশে অবস্থিত হাওর বিলাসে দর্শণার্থীদের ভিড় হচ্ছে।
হাওর বিলাসের পাশে রয়েছে নাস্তা করার জন্য হাওর ভিউ ক্যাফে। এতে রয়েছে মজাদার পিঠাসহ হরেক রকমের খাদ্য সামগ্রী।হাওর পাড়ের মনোরম পরিবেশে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ নিরাপদ বেষ্টনীতে হাওর বিলাস স্পটটি দিনদিন দেশের সর্বত্র পরিচিতি লাভ করছে এবং পরিবার পরিজন নিয়ে বন্ধু বান্ধব সহ সর্বস্তরের পর্যটকরা আসছেন।পাহাড় বিলাসেও অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে নাস্তা করার সুবিধা রয়েছে। দুটি পর্যটন স্পটেই প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে।
ঈদের ছুটিতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শণার্থীদের আগমনে স্থানীয় মানুষদের মাঝেও আনন্দ ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে দর্শণার্থীদের আগমনে এখানে বিভিন্ন দোকানীদের বেঁচাকেনা বেড়েছে। সিএনজি, রিক্সা,অটোরিকশা চালকদের আয় বেড়েছে। অনেক বেকার ছেলেরা ছবি তুলে আয় করছে। তাছাড়া নানাসাজে বাহিরের মানুষ,নারী-পুরুষ পর্যটকরা আসার ফলে যেনো বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাটি অপরূপ সৌন্দর্য্যে লাভ করছে। এ উপজেলায় চলতি বছর হাওরের বোরো ফসল ঘরে তুলতে পেরে কৃষকদের মাঝেও আনন্দ ফুটে উঠেছে।
সার্বিকভাবে ঈদের ছুটিতে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটনপ্রেমী দর্শণার্থীদের ভিড়ে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠছে।প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পরিবার পরিজন, আত্মীয় স্বজন,বন্ধু-বান্ধব সহ উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে আসছেন।
নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে পীরজাদা,পীরসাহেব বাড়ি থেকে এসএম শিপন, সুফল আহমেদ ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা থেকে আগত জহিরুল ইসলাম বলেন,হাওর বিলাস পর্যটন কেন্দ্রটি ভিন্ন ধরণের উপভোগ করার মত।আমরা একসাথে সংগঠনের ১৬ জন এসেছি,এখানে এসে খুবই আনন্দ উপভোগ করছি।তারা হাওরভিউ ক্যাফেতে বসে শাহ সবকদ,শাহ বুলবুল আলম ও শাহ আবদুল করিমের কয়েকটি সমবেত গান পরিবেশন করেন। সুনামগঞ্জ শহরের হাসন নগর থেকে আসা সাদিয়া, সৃষ্টি ও অনিন্দিতা বলেন, হাওর বিলাস আমাদের খুবই ভাল লেগেছে।তারা বলেন বসার মত সুবিধা যদি আরো থাকতো তবে আরো ভাল হতো।জনৈক পর্যটক বলেন,হাওর বিলাস স্পটে টয়লেট ব্যবস্থা না থাকায় কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়।ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নজর দিবেন বলে তারা আশা করেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাবেক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বর্তমানে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাহাব উদ্দীন সস্ত্রীক ও সাবেক এটিও অনুকূল দাশ হাওর বিলাসও পাহাড় বিলাস ভ্রমণ করেন।তারা এ প্রতিবেদককে বলেন,সত্যিকার অর্থে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাটি এখন অপরূপ সৌন্দর্য্যে ভরপুর হয়ে উঠছে।উপজেলাকে দৃষ্টিনন্দন করে উন্নয়ন করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানান। অনুরূপ অনেকেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ যোগ্য যে,বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদিউর রহিম জাদিদ, এ উপজেলায় যোগদানের পর উপজেলাকে সুন্দর পরিবেশে উন্নয়ন করার কাজ শুরু করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদিউর রহিম জাদিদের ঐকান্তিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পর্যটন স্পট হাওর বিলাস,পাহাড় বিলাস, হাওরবৃত্ত, বোয়ালচত্ত্বর, জয়বাংলা চত্ত্বর, উপজেলার মানচিত্র ফোয়ারা, তেরাকৌটা,কৃষক জেলে স্পট আশ্রয়, কৃষাণ চত্ত্বর,ফুলের বাগান, ওয়াক ওয়ে,শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট নির্মাণ করেন।তাছাড়া তিনি বিভিন্ন বাজারের উন্নয়ন করেন। তার এ দৃষ্টিনন্দন, মনোমুগ্ধকর উন্নয়নের জন্য উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যে প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে এবং বাহির থেকে আসা পর্যটকরাও ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদিউর রহিম জাদিদ বলেন,আমি উপজেলায় যোগদানের পর দেখি সন্ধ্যার পর উপজেলা সদরে লোকজন আসা যাওয়া দেখা যায়না।
এমতাবস্থায় উপজেলাকে সুন্দর করার প্রচেষ্টায় সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে হাওরবিলাস, পাহাড়বিলাসসহ পর্যটন স্পটগুলোতে প্রতিদিন স্থানীয় সহ বিভিন্ন স্থান থেকে বহু পর্যটকরা আসছেন। এতে উপজেলার দৃশ্যপট বদলে যাচ্ছে।
কমেন্ট করুন