আলম সাব্বির ঃঃ-ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে আজ তাহিরপুরের শিমুলবাগান।ফুটন্ত শিমুলের রক্তিম আভায় ছেয়ে যাওয়া দিগন্ত, পাহাড়-নদী বিধৌত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘেরা সারি-সারি শিমুল গাছ দেখে যে কোন জনেরই মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই! গোলাকার গাছ,চিকন ডাল,ন্যাড়া মাথায় ঝুলে থাকা ফুলগুলো এক অন্যরকম আবহ তৈরি করে রেখেছে প্রকৃতি প্রেমীদের।
প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী ও পরিবার পরিজন সহ লোকারণ্য আজ শিমুলের বাগান।
চারপাশে ঝরা ফুলের ওপর হাঁটতে হাঁটতে মনে হবে স্বর্গীয় লালগালিচায় বুঝি আপনি হেঁটে চলেছেন। প্রতিটা গাছই ফুলে ফুলে ভরা। এখানে ডালে ডালে মধু খেতে আসে বুলবুলি,কাঠশালিক,হলদে পাখিরা।
পাখির কিচিরমিচির ডাকে মুখর থাকে গোটা বাগান।যেন এক রূপকথার রাজ্য।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তমএ শিমুল বাগানের অবস্থান উপজেলার সীমান্ত মেঘালয় পাহাড়ের পাদস্থিত যাদুকাটা নদী ও বারেক টিলা সংলগ্ন মানিগাঁও এলাকায়। বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বৃক্ষপ্রেমী মরহুম জয়নাল আবেদীন এই বাগানের প্রতিষ্ঠাতা।
২০০২ সালে তিনি উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের পাশে যাদুকাটা নদী সংলগ্ন ৯৮ বিঘা অনাবাদী বালুকাময় জমিতে সারিবদ্ধভাবে ৩ হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপণ করেন। এক যুগেরও বেশি সময় পর সেই শিমুল চারাগুলো এখন পুষ্প-পত্র-পল্লবে মুখরিত।
আজ সরেজমিনে দেখা গেছে,পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে তাহিরপুরের শিমুল বাগান। দেশ-বিদেশ থেকে এ স্থানে আগমন ঘটছে প্রকৃতিপ্রেমীদের।
বাংলাদেশ ট্র্যাভেলার্স গ্রুপের সদস্য চঞ্চল ও ঢাকার চিড়িয়াখানা রোডের ব্যবসায়ী ইমনের সাথে কথা বল্লে তারা জানান শিমুল বাগানের পাশাপাশি যাদুকাটা নদী ও বারেক টিলার নান্দনিক সৌন্দর্য যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমীকে কাছে টানবে বারবার।
ভ্রমণ পিপাসুদের খাবারের প্রয়োজনে শিমুল বাগানের ভিতরেই রয়েছে একটি স্বাস্থ্যকর ক্যান্টিন। এখানে যে কোনো খাবার সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাবে, তবে সময় দিয়ে অর্ডার করতে হবে বলে জানালেন ক্যান্টিনের মালিক কুুুুহিনুর।
বাগানটির প্রতিষ্ঠাতার ছেলে সাবেক বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান রাকাব উদ্দিন জানান, শিমুল বাগানটি যুগ যুগ ধরে আমার বাবার স্মৃতি বহন করবে, এর চেয়ে বড় আর কী পাওয়ার আছে! আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা, পয়োনিষ্কাশন ও উন্নত খাবারসহ সকল সুবিধার ব্যবস্থা করেছি যাতে পর্যটকদের কোনো সমস্যা না হয়।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, মরহুম হাজী জয়নাল আবেদীন চেয়ারম্যান এর দুরদর্শী চিন্তাধারার প্রতিফলন এই শিমুল বাগান।তিনিই ছিলেন সত্যিকারের জনগনের সেবক।
প্রশাসন সহ সকল শ্রেণীর লোকজনের সহযোগিতা থাকলে অচিরেই আমরা তাহিরপুরকে পর্যটন সমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি ঘটাতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।
কমেন্ট করুন