বিশেষ প্রতিনিধিঃ-পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার ছেলে ট্রিপল হত্যা মামলার পরোয়নাভুক্ত আসামি উজ্জ্বল বাহিনীর হামলার শিকার হন দিরাই প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আবু হানিফ।
মঙ্গলবার বিকালে পৌর শহরের দাউদপুর গ্রামে পুলিশের সামনেই এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিককে প্রথমে দিরাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ প্রত্রিকার দিরাই-শাল্লা ও দৈনিক সুনামগঞ্জ খবর প্রত্রিকার দিরাই প্রতিনিধি হিসেব কর্মরত আছেন।
এর আগে উজ্জ্বল ও তার বাহিনীর হাতে হামলার শিকার হন সাংবাদিক এমরান হোসেন। এছাড়া তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বিগত ২১ জুলাই রাতে দিরাই বাজারে উজ্জ্বল ও তার বাহিনীর সদস্যরা পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা যায় বলে জানান স্থানীয়রা।
জানা গেছে, দাউদপুর গ্রামের হাজী আবু জাহের চৌধুরীর বাসায় তার মেয়ে সাহেরা খানম চৌধুরী ও সৎভাই জুলহাস গংদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন সাহেরা খানমের ছেলে সোহেল মিয়া তাদের দ্বিতল বাসায় বৈদ্যুতিক মিটারের সংযোগ দিতে গেলে সৎ মামা জুলহাস ও তার লোকজন চড়াও হয়ে উঠে এবং হুমকি ধামকি দেয়।
এরপর সোহেলের বোন দিলারা খাতুন পরিস্থিতি খারাপ দেখে দিরাই থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে দিরাই থানার এসআই সজিব দত্ত ও এসআই রাজেশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনা স্থলে যায়।
এ সময় খবর পেয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এর কিছুক্ষণ পর উজ্জ্বলের নেতৃত্বে তার বাহিনীর লোকজন জুলহাসের পক্ষ হয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাহেরা খাতুনের বাসায় তাণ্ডব চালায়।
এ সময় সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী ঘটনার ছবি তুলতে গেলে তার উপর উজ্জ্বল ও তার বাহিনীর লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় হামলার শিকার সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
আহত সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে আমি সংবাদ সংগ্রহের কাজে ঘটনাস্থলে যাই, এ সময় উজ্জ্বল বাহিনীর তাণ্ডবের ছবি তুলতে গেলে কোনো কিছু বুঝার আগেই চন্ডিপুর গ্রামের মোশাররফ মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল ও আছাব উদ্দিনসহ কয়েকজন পুলিশ থাকাবস্থায় আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দিরাই সার্কেল আবু সুফিয়ান জানান, বাসার ভেতর হামলার খবর পেয়ে পুলিশের ইমার্জেন্সি ফোর্স পাঠানো হয়। বাহিরে হামলার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসআই সজিব দত্ত বলছেন, আমি বাসার ভেতরে ছিলাম, গেটের সামনে ঘটনা ঘটেছে।
৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লিটন রায় জানান, পুলিশের উপস্তিতিতে উভয়পক্ষকে নিভৃত করার চেষ্টা করছি। এ সময় বহিরাগতদের বাড়াবাড়িতেই সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী দিলারা খাতুন জানান, আমার ভাই সোহেল সরদার বাসায় মিটার লাগাতে গেলে, জুলহাস মামা ভাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণের চেষ্টা চালায়। এ সময় অবস্থা খারাপ দেখে পুলিশে খবর দেই। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এরপর জুলহাস মামার শ্বশুর আছাব উদ্দিন মিয়া উজ্জ্বলকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। তারা ঘটনাস্থলে এসেই সাংবাদিক ও আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়।তবে জুলহাস মিয়া বলেছেন, আবু হানিফ জোর করে মিটার লাগানোর চেষ্টা করে। তার ওপর কে হামলা করেছে আমি জানি না, আবু হানিফ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে তিনি দাবি করছেন।
ওসি আজিজুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
কমেন্ট করুন