মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে রোকন উদ্দিন লস্কর : প্রতিবন্ধী নজরুল এখন স্বপ্নের ঘরে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছে। ভাঙ্গা হুইল চেয়ারে বসে নজরুল হাট বাজার বাসষ্ট্যান্ডে ঘুরে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও রাতে ঘুমানোর নিজস্ব ঠাঁই ছিল না। সন্ধ্যার পর তার মাথায় চিন্তার ভাজ পড়ত। কোথায় রাত কাটাবে? কারো বান্দায় কিংবা রাস্তা-ঘাটে কাটত তার নির্ঘুম রাত। এখন সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর পেয়ে প্রতিবন্ধী নজরুল নির্বিঘ্নে রাতে ঘুমাতে পারছে।
স্বপ্নের ঘর পেয়ে ঘরে এনেছে নববধূও। হবিগঞ্জ মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের সুরমা চা বাগান এলাকার শারীরিক প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলাম ভাঙ্গা হুইল চেয়ারে বসে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। পা দুটি অচল। এর আগে হামাগুড়ি দিয়ে চলত। চা শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নে টেকসই আবাসন নির্মাণের আওতায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রাণালয়ের অর্থায়নে গত ৫মাস আগে প্রতিবন্ধী নজরুলকে একটি ঘর তৈরি করে দিয়েছে সরকার। নজরুলের বিয়ে করার কোন সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু নজরুল নতুন ঘর পাওয়ার পরই বিয়ের প্রস্তাব আসে। উপজেলার হরষপুর সওদাগর পাড়ার মৃত লবি মিয়ার শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে সালমার সাথে ৩ মাস পূর্বে বিয়ে হয়। প্রতিবন্ধী নজরুল বলেন, আগে সে রাস্তা ঘাটে পড়ে থাকত। এখন সরকারী ঘরে স্ত্রী ও মাকে নিয়ে বসবাস করছে। নববধূ সালমা বলেন, ৩ ভাই ৪ বোন মাসহ পিতৃহারা পরিবারে তাদের ৮ জনের সংসার ছিল। পরিবারের কাছে সে ছিল বোঝা স্বরূপ। এখন নজরুলের সাথে বিয়ে হওয়ার পর তারা এখন নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
ইউপি সদস্য মো. এনাম মিয়া বলেন, আগে নজরুলের খুবই করুন অবস্থা ছিল। এখন প্রতিবন্ধী দম্পতি সরকারী ঘরে সুখে তাদের জীবন কাটছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। প্রতিবন্ধী নজরুল দম্পতি এই অঙ্গীকারের সফল বাস্তবায়ন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন,অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে চা বাগানে প্রতিবন্ধী নজরুল দম্পতির ঘর তৈরি করা হয়েছে। এখন তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন,নজরুল দম্পতি সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষ। সরকার এই সব মানুষকে গৃহ তৈরি করে দিয়ে উন্নয়নের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনছে।
কপি রাইটসঃ লাউড় বিডি নিউজ ২৪