নিউজ ডেস্ক: অর্থ সাশ্রয় ও পরিবেশ দূষণ কমাতে এবার সব রেল কোচে বায়ো-টয়লেট সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অটোমেটিক ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এর ফলে একটি রেল কোচ পরিষ্কার করতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ এক মিনিট।
সনাতন পদ্ধতিতে ট্রেনের মানববর্জ্য ফেলার কারণে নষ্ট হচ্ছে রেলপথ। মানববর্জ্যে কারণেই বঙ্গবন্ধু সেতুর রেলের ক্লিপ মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই ক্লিপ পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
২০১৫ সালে ৯৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ভারত থেকে ১২০টি কোচ আমদানি করা হয়েছে। ভারতের রেল কোচ সরবরাহকারী কোম্পানি রাইটস লিমিটেড। তবে কোচগুলোতে বায়ো-টয়লেট নেই।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পশ্চিম) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা বাংলানিউজকে বলেন, “বায়ো-টয়লেট না থাকায় রেলপথে যেমন পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি হচ্ছে আর্থিক ক্ষতি। কারণ মানববর্জ্য অধিকাংশ সময় রেলপথ ও যমুনা রেলসেতুতে ফেলা হয়। ফলে রেলপথের ক্লিপ কম সময়ে মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। রেলের ক্লিপ দ্রুত সময়ে পরিবর্তন না করলে এটা বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। প্রতিটা কোচের নিচে দামি দামি যন্ত্রাংশ থাকে এগুলোও নষ্ট হচ্ছে। তাই বায়ো-টয়লেট সংযুক্ত করে উন্নত দেশের মতো আধুনিক সেবা দেওয়া হবে। ”
বায়ো-টয়লেট স্থাপনের সুবিধা হলো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে একটা নির্দিষ্ট সময়ে বর্জ্য পরিষ্কার করা যাবে, যা স্বয়ংক্রিভাবে সম্পন্ন হবে। এর ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমে আসবে অনেকখানি।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় তিনটি প্যাকেজে ২০০টি মিটারগেজ ক্যারেজ, ৫০টি ব্রডগেজ ক্যারেজ ও দুটি অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট সংগ্রহ ও স্থাপন করা হবে।
২০১৫ সাল থেকে প্রকল্পটি চলমান, ২০২১ সালে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে। ইতোমধ্যে তিনটি প্যাকেজের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংশোধন ও ভেরিয়েশন প্রস্তব অনুমোদনের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি (পিআইসি) সভায় আলোচনা করা হয়েছে। নতুন এই সংযোজন চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে চূড়ান্ত করা হবে। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। চুক্তি পত্রের স্পেসিফিকেশনের বাইরে ক্যারেজ বায়ো টয়লেট সংযোজনের জন্য ও অটোমেটিক ওয়াশিং প্ল্যান্টের নকশা পরিবর্তন হওয়ায় প্রকল্পের সংশোধন ও ভেরিয়েশন করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সিএমই-উন্নয়ন) ও প্রকল্পের পরিচালক মো. বোরহান উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, “প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১১টি আইটেম সংযোজন করা হচ্ছে। এই বিষয়ে পিআইসি সভায় আলোচনা করা হয়েছে। নতুন আইটেমের মধ্যে অন্যতম রেল কোচে বায়ো টয়লেট সংযোজন। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যেই এটি পাস হবে। রেল কোচে বায়ো-টয়লেট সংযোজন করতে পারলে কোথাও মানববর্জ্য ফেলতে হবে না। এটা মিনিমাইজ করে নির্দিষ্ট সময়ে স্বয়ংক্রিভাবে পরিষ্কার করা যাবে। ঢাকা ও রাজশাহী স্টেশনে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। এতে ব্যয় হবে মোট ৩০ কোটি টাকা। দেশের সমস্ত রেল কোচই স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষ্কার করা হবে। রেলপথ ও রেলস্টেশন হবে দুর্গন্ধমুক্ত। ”
সূত্র: বাংলানিউজ
কপি রাইটসঃ লাউড় বিডি নিউজ ২৪