১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সংবাদ শিরোনামঃ
সুনামগঞ্জের হাওরে নতুন বছরের স্বপ্ন: পরিষ্কার নদী,পরিচ্ছন্ন আকাশ ও নবায়নযোগ্য শক্তি” শীর্ষক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণার্থীদের সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় পরিদর্শন তাহিরপুর চোরাচালানের গডফাদার রফ মিয়া আটক সুনামগঞ্জে এক যুবক গুলিবিদ্ধের ঘটনায় পৌরসভার মেয়রসহ ৫জনের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ বিশ্বম্ভরপুরে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভা অনুষ্টিত বিশ্বম্ভরপুর এফআইভিডিবি’র বিএইচএ প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা সুনামগঞ্জে জনতা ব্যাংকের এটিএম বুথ উদ্বোধন সুনামগঞ্জ বিজিবির অভিযানে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য আটক সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নিয়ে অনৈতিক অভিযোগের কারণে  স্থগিত পিআইসি গঠন কার্যক্রম।  বিশ্বম্ভরপুরে উপজেলা যুব ফোরামের র‍্যালী ও মানববন্ধন বিশ্বম্ভরপুরে বেগম রোকেয়া দিবস পালিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিশ্বম্ভরপুরে আন্তর্জাতিক দূর্নীতি বিরোধী দিবস ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশ্বম্ভরপুরে জলবায়ু পরিবর্তন ও জেন্ডার বিষয়ক প্রশিক্ষণ সুনামগঞ্জে গানে গানে বাউল কামালের ১২৩ তম জন্মবার্ষিকী পালিত আগ্নেয়াস্ত্র সহ তাহিরপুর সীমান্তে ৩ যুবক আটক সুনামগঞ্জে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৭২ তরুণ-তরুণী  হাওরে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ , ৫ জেলে আটক সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা পুলিশের উদ্যোগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত
সুরমা নদীর ফেরি নৌকায় গান গেয়ে সংসার চলে অন্ধ শিল্পী গোলাপ মিয়ার।

সুরমা নদীর ফেরি নৌকায় গান গেয়ে সংসার চলে অন্ধ শিল্পী গোলাপ মিয়ার।

বিশেষ প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ ঃ শিল্প সংস্কৃতির রাজধানী সুনামগঞ্জ। এই জেলায় রয়েছে শত শত বাউল শিল্পী। যাদের অনেকেরই পেশা বাউল গান গাওয়া। তেমনি একজন অন্ধ বাউল গোলাপ মিয়া। সুরমা নদীর ফেরি নৌকায় গান গেয়ে তাঁর সংসার চলে। করোনাকালে কষ্টে দিনাতিপাত করলেও বসত ঘর জরাজীর্ণ হওয়ায় থাকেন অন্যের বাড়িতে।
অন্ধ বাউল গোলাপ মিয়ার বয়স ৬৮ বছর। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কাইয়ারগাঁও গ্রামে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৬ বয়সে গোলাবারুদের ধোয়ায় তাঁর দুই চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। এরপর বেঁচে থাকার তাগিদে গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক রশিদ মিয়ার কাছ থেকে তিনি শুনে শুনে গান গাওয়া শেখেন। পরে ঢাকায় গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজানো আয়ত্ব করেন। প্রায় তিন যুগ ধরে সুনামগঞ্জের রাস্তাঘাট, ফেরি নৌকায় বেহেলা ও সরাজ বাজিয়ে গান গেয়ে চলেছেন। দৃষ্টি প্রতিবন্দী হিসেবে সরকারি ভাতা পান তিনি। তাঁর ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে। বড় মেয়েকে গ্রামে বিয়ে দিয়েছেন। অন্য ছেলে মেয়েদের মধ্যে এক ছেলে ও দুই মেয়ে লেখাপড়া করছে।

লোকজন কে গান শুনিয়ে তাদের কাছ থেকে ৫/১০ টাকা করে যা পান তা দিয়ে সংসার চলছে  গোলাপ মিয়ার। তবে করোনাকালে আগের মত গান গাইতে না পারা ও মাথা গোজার বসতঘরটি জরাজীর্ণ হয়ে ভেঙ্গে পরার উপক্রম হওয়ায় পড়েছেন চরম সংকটে। নিজের বসতঘরে থাকতে না পেরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ৬ মাস ধরে থাকছেন বড় মেয়ের বাড়িতে।
স্থানীয়রা জানান, অন্ধ বাউল গোলাপ মিয়া প্রায় ৬ বছর ধরে সুনামগঞ্জ শহরতলীর সুরমা নদীর ধারারগাঁও-হালুয়াঘাটের ফেরি নৌকায় গান গাইছেন। ফেরিঘাটের নৌকায় গান গাইতে বাড়ি থেকে প্রতিদিন আসা-যাওয়ায় ২০০ টাকা মোটরসাইকেল ভাড়া গুনতে হয়। ফেরিঘাটে যাত্রী পারাপার কম হলে অনেক দিন আসা-যাওয়ার ভাড়াই পাননি। তবুও পেটের টানে স্ত্রী হোসনে আরাকে সঙ্গে নিয়ে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে গান গেয়ে চলেছেন তিনি।
জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য কাইয়ারগাঁও গ্রামে বাসিন্দা নজরুল ইসলাম মানিক বলেন,‘ আমার জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি অন্ধ বাউল গোলাপ মিয়া বিভিন্ন এলাকার রাস্তা-ঘাটে ও নৌকায় গান গাইছেন। গান গেয়েই তিনি সংসার চালাচ্ছেন। একটি সরকারি ঘর পাওয়া তার প্রাপ্য ছিল। তবে ঘর দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের কাছে নেই। তাকে সরকারি একটা ঘর দেওয়া হলে দুঃখ-কষ্ট অনেকটাই লাঘব হত তাঁর। ’
গোলাপ মিয়ার গানের শ্রোতা শহরতলীর ধারারগাঁও গ্রামের তাজুল ইসলাম বলেন,‘ নৌকায় গান গেয়ে মানুষের কাছ থেকে ৫/১০ টাকা পেয়ে কষ্টে জীবন-যাপন করছেন তিনি। সরকারিভাবে তাকে সহায়তা করলে ও সরকারি একটি ঘর দেওয়া হলে বৃদ্ধ বয়সে কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।
গোলাপ মিয়ার বড় মেয়ে চাঁনমালা খাতুন বললেন,‘বাবার বসত-ঘর ভাঙ্গাচোরা থাকায় গত ৬ মাস যাবত মা-বাবা,ভাই-বোন সবাইকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে থাকছেন। শুনেছি সরকার গরিব মানুষদের ঘর দেয়, আমার বাবারে একটা ঘর দিলে বাবার উপকার হইত।
বাউল গোলাপ মিয়া ও তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা বললেন, আমাদের নিজেদের ছোট্ট একটি বাড়ি ও দুই চালা বসতঘর আছে। কিন্তু ঘরের ভাঙ্গা চালা দিয়ে পানি পরে, জড়াজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে পরার উপক্রম। কয়েকটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে আটকে রাখছি। যে কোন সময় ঘরটি ভেঙ্গে পড়তে পারে। ছেলে-মেয়েসহ সবাইকে নিয়ে ৬ মাস যাবত মেয়ের বাড়িতে থাকছি। আমাদেরকে সরকারি একটি ঘর দিলে কষ্ট দূর হতো। দিনে রাস্তা-ঘাটে ও নৌকায় গান গেয়ে অন্তত রাতে নিজেদের ঘরে থাকতে পারতাম।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, গত কিছুদিন আগে অন্ধ বাউল শিল্পী গোলাপ মিয়াকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও চাল-ডাল, চিনিসহ খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। শুনেছি তার ঘরটি জরাজীর্ণ। মুর্জিব বর্ষের ঘর দেওয়া আপাতত শেষ। নতুন ঘর আসলে তাকে একটি ঘর দেওয়া হবে। এছাড়াও লকডাউন শেষে তাকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন





পুরাতন খবর খুঁজুন

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০৩১