লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ :
সুনামগঞ্জের প্রতিবাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্যসচিব মালেক হোসেন পীর (৬৮) আর নেই। সোমবার বেলা পোনে ১২টায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য আতœীয়-স্বজন রেখে মারা যান। মালেক হোসেন পীরের দুর্নীতিবিরোধী লড়াই, সংগ্রাম নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে লেখালেখি হয়েছে। ২০২০ সালে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ তাকে সম্মাননা দিয়েছিল। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল শোক জানিয়েছে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী তেঘরিয়া পীর বাড়ির মছব্বির হোসেন পীর ও গুলচেরা বেগমের ছয় সন্তানের মধ্যে সবার বড় মালেক হুসেন পীর। ১৯৭১ সনে দশম শ্রেণীর ছাত্রাবস্থায় বাড়ি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বালাট সাবসেক্টরের প্রথম ব্যাচের একজন গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন। যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফিরে তিনি অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি সামাজিক নানা আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন। জেলা ব্যাপী একজন প্রতিবাদী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি সর্বজন শ্রদ্ধোয় ছিলেন। তিনি স্বৈরাচার এরশাদের সময় চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মিছিল করে গ্রেপ্তার হন। জেলা আওয়ামী লীগের দুই বারের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে প্রতিবাদ জারি রেখেছিলেন তিনি। শেষ বয়সে অভাব অনটনে দিন কাটতো তার। অন্যের একটি ভাঙ্গা ঘরে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন।
সুনামগঞ্জের এই মহান বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেপ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. জাকির হোসেন, পৌর মেয়র নাদেও বখত প্রমুখ। তারা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বাদ এশা তেঘরিয়া ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। এর আগে তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হয়।
কমেন্ট করুন