শাল্লা প্রতিনিধিঃ- হাওর বেষ্টিত ভাটির জনপদ শাল্লা উপজেলা হাসপাতালের বারান্দায় অযত্নে অবহেলায় ১৬ বছর ধরে পড়ে আছে একটি এক্সরে মেশিন। অবহেলিত এই উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নের লক্ষে সরকার ২০০৫ সালে মে মাসে প্রায় ১৯ লাখ টাকা মূল্যের এক্সরে মেশিনটি প্রদান করে। কিন্তু টেকনিশিয়ান না থাকায় এটি চালু করা যায় নি। হাসপাতালের দক্ষিণ পাশের গেইটের সামনের বারান্দায় পড়ে থাকতে থাকতে এক্সরে মেশিনটি বিনষ্ট প্রায়। দীর্ঘদিন এটি বক্সের মধ্যে থাকলেও এখন বক্স ভেঙ্গে মেশিনটির বিভিন্ন অংশ নানা জায়গায় অযতেœ অবহেলায় পড়ে আছে।
চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন বলেন, সরকারের মাল বলে কি কোন হিসাব নেই। এতো টাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ এক্সরে মেশিন বহু বছর যাবত বারান্দায় থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অথচ দেখার কেউ নেই। হাসপাতাল নির্মাণ হওয়ার পর থেকে এখানে এক্সরে মেশিনের সেবা চালু হয় নি। ১৬ বছর পূর্বে আসা এক্সরে মেশিনটি অকেজো হয়ে আছে। সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ। হাসপাতাল থাকলেও কোনো রকম পরিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন সঠিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে বহুদিন ধরে।
শিক্ষক অরবিন্দু দাস বলেন, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মেশিন অকেজো হয়ে দীর্ঘ দিন যাবত বারান্দায় পরে আছে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায়। দায়িত্বে নিয়োজিতগণ উদ্যোগী না হলে এক্সরে মেশিনটি অযতেœ অবহেলায় নষ্ট হবে তাতে সন্দেহ নেই।
বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দক্ষিণ গেটের সামনে মেশিনটির বিভিন্ন অংশ নানা ভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
শাল্লা উপজেলার ক্রীড়াবিদ সুব্রত কুমার দাস বলেন, হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি চালু না থাকায় সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শারীরিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মানুষকে ছুটে যেতে হচ্ছে ঢাকা, সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের অন্যান্য জেলায়।
আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বলেন, ভাটি অঞ্চলের মানুষদের ৭৫ কিলোমিটার পথ পাড়ী দিয়ে এক্সরে করার জন্য সুনামগঞ্জে যেতে হয়। অথচ শাল্লা সদর হাসপাতালে এক্সরে মেশিনটি থাকা সত্বেও মানুষের কাজে আসছে না।
শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন ভূঈয়া বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। এসেই দেখছি মেশিনটির করুন অবস্থা। এত মূলবান মেশিনটি স্থাপন না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টেকনিশিয়ান না থাকায় এক্সরে মেশিনটি চালু করা যাচ্ছে না। এই বিষয়ে আমি চিঠি লিখেছি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন আহমদ বলেন, এক্সরে মেশিনটি দেয়ার পর কোনো টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়া হয়ি ন। যার ফলে মেশিনটি চালু করা সম্ভব হয় নি। তবে মেশিনটি চালু করার জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি।
কমেন্ট করুন