২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সংবাদ শিরোনামঃ
ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ ৭মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশনা বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে অপরুপ রুপে সেজেছে তাহিরপুরের শিমুল বাগান- বিশ্বম্ভরপুরে ক্রিকেট খেলায় কৃষ্ণনগর স্পোটিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ান সুনামগঞ্জে  কৃষি ঋণ মেলা ও প্রকাশ্যে কৃষি ঋণ বিতরণ  অনুষ্ঠিত। তাহিরপুর উপজেলার বৃহৎ বাদাঘাট বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন তাহিরপুরে ইউএনও’র পদক্ষেপে ৫টি হাওর জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেলো সুনামগঞ্জের হাওরে নতুন বছরের স্বপ্ন: পরিষ্কার নদী,পরিচ্ছন্ন আকাশ ও নবায়নযোগ্য শক্তি” শীর্ষক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণার্থীদের সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় পরিদর্শন তাহিরপুর চোরাচালানের গডফাদার রফ মিয়া আটক সুনামগঞ্জে এক যুবক গুলিবিদ্ধের ঘটনায় পৌরসভার মেয়রসহ ৫জনের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ বিশ্বম্ভরপুরে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভা অনুষ্টিত বিশ্বম্ভরপুর এফআইভিডিবি’র বিএইচএ প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা সুনামগঞ্জে জনতা ব্যাংকের এটিএম বুথ উদ্বোধন সুনামগঞ্জ বিজিবির অভিযানে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য আটক সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নিয়ে অনৈতিক অভিযোগের কারণে  স্থগিত পিআইসি গঠন কার্যক্রম।  বিশ্বম্ভরপুরে উপজেলা যুব ফোরামের র‍্যালী ও মানববন্ধন বিশ্বম্ভরপুরে বেগম রোকেয়া দিবস পালিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিশ্বম্ভরপুরে আন্তর্জাতিক দূর্নীতি বিরোধী দিবস ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার
শাল্লায় শতশত কৃষকের গোলার ধান পানিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

শাল্লায় শতশত কৃষকের গোলার ধান পানিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

 

সন্দীপন তালুকদার সুজন শাল্লা প্রতিনিধিঃ-

সিলেট-সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার পর পরই শাল্লা উপজেলায় অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে হাওরে পানির ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এরমধ্যে একাধারে ৫ঘণ্টা বৃষ্টিপাত হওয়ায় প্রতিটি গ্রামই বন্যায় প্লাবিত হয়।ফলে পানিতে তলিয়ে যায় হাজার হাজার পরিবারের গোলার ধান। বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়ে উপজেলার প্রায় ২৫হাজার পরিবারের দেড় লাখ মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা না থাকায় সিংহভাগ মানুষ অবস্থান করেন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে। অনেকই সড়কে আশ্রয় নেন। যেকারণে অনেকই ত্রাণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ত্রাণ না পেয়ে অনেকই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নানান প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে একমাত্র বোরোজমির আধাপাকা ধান গোলায় তুললেও, শেষরক্ষা হয়নি। বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ যেনো একেবারে ষোলকলা। এমনিতেই ঋণে জর্জরিত কৃষক। তার উপর এমন বন্যা যেনো মরার উপর খরার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার(২৪জুন) সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার বহু গ্রামে শতশত কৃষকের গোলার ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। টানা কয়েকদিন পানির নিচে থাকায় ধানে গজিয়েছে চারাও। উপজেলার হবিবপুর ইউপির নারায়ণপুর গ্রামের রন্টু কুমার দাস ২০কিঃমিঃ দূর থেকে নৌকা দিয়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়া ১শ’ মণ ধান দিরাই শাল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে শুকানোর জন্য নিয়ে এসেছেন। ধানে চারা গজানোর পাশাপাশি বিদঘুটে দুর্গন্ধ বেরিয়েছে। তিনি বলেন ১মণ ধান নষ্ট হয়ে গেছে।এখন এগুলো শুকাচ্ছেন গরু ও হাঁসের খাবারের জন্য।তিনি আরো জানান নারায়ণপুর নয়াহাটি, আগুয়াই গ্রামের অনেক কৃষকের গোলার ধান পানিতে ডুবে গেছে। একই ইউপির বাসিন্দা রামপুর গ্রামের নিশিকান্ত দাস বলেন আমার ৬শ’ মণ ধানের কারি (গোলা) পানির নিচে। এরমধ্যে ৩শ’ মণ ধান নষ্ট হয়ে যাবে। আনন্দপুর গ্রামের সূর্যকান্ত রায় বলেন আমার দেড়শ মণ ধানের মধ্যে কিছু ধান আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে পেরেছেন। আরো ১শ’ মণ ধানের উপরে পানির নিচে। বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্র দাস বলেন বন্যায় আমার ৫০মণ ধান নষ্ট হয়ে যাবে। মুক্তিযোদ্ধা দরশন বিশ্বাস জানান তার দেড়শ মণ ধানের গোলায় পানি উঠেছে। তিনি পরিবার নিয়ে রবীন্দ্র রায়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

বাহাড়া ইউপির পোড়ারপাড় গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেন্দ্র শুক্লবৈদ্য জানান তার গোলার ৪শ’ মণ ধানের মধ্যে ৩শ’ মণ ধানের ক্ষতি হবে। এছাড়াও বাহাড়া নতুনহাটি, সুখলাইন নতুনহাটি, নতুন যাত্রাপুর, পোড়ারপাড়, হরিনগর, শান্তিপুর, তাজপুর, মন্নানপুর, মেঘনাপাড়া, খল্লি, ভেড়াডহর, প্রতাপপুর, নাসিরপুর, ডুমরা, আঙ্গারোয়া নতুনহাটি, নোয়াগাঁও, ভাটগাঁও, মুছাপুর, মির্জাপুর নতুনহাটি, হরিপুর নতুনহাটি, শাল্লা ইউপির দামপুর নতুনহাটি, মনুয়া নতুনহাটি, হোসেনপুর, কাদিরপুর নতুনহাটি, দুলুপ পুর, শ্রীহাইল নতুন হাটি , আদিলপুর, রাজনগর, শান্তি নগর, চব্বিশা নতুনহাটি,দেয়ালেরকান্দা, গোবিন্দপুর নতুনহাটি, রৌয়া নতুনহাটি, সীমেরকান্দা,গ্রাম শাল্লা নতুনহাটি,আব্দা।

২নং হবিবপুর ইউপির,আগুয়াই, শাসখাই, মৌরাপুর, মার্কুলী, টুকচাঁনপুর, রামপুর, নিয়ামতপুর, চরগাঁও, নোওয়াগাঁও, হবিবপুর-ধীতপুর, আনন্দপুর, চাকুয়া, আটগাঁও ইউপির মির্জাপুর, দাউদপুর, রাহুতলা, মামুদনগর, শরীফপুর, সরমা, বাজারকান্দি নতুনহাটি, ইয়ারাবাদ, নিজগাঁও, সোনাকানিসহ উপজেলার আরো অনেক গ্রামের কৃষকের গোলার ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

এব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা জগদীশ সরকার বলেন এই প্রলয়ঙ্করী বন্যায় কৃষকের হাজার হাজার মণ ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বহু কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানান তিনি। এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দিপু রঞ্জন দাস বলেন এই মহাদুর্যোগে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি কৃষি কর্মকর্তাকে বলবো, আপনি ধানের ক্ষয়ক্ষতির একটি তালিকা প্রস্তুত করে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

শাল্লা ইউনিয়নের চব্বিশা গ্রামের সমাজ সেবক মোঃআকিকুর রহমান জানান,, আমাদের শাল্লা ইউনিয়নের প্রায় অনেক গ্রামেই কৃষকের গোলার ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়েছে, এতে ব্যাপক পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছাত্তার মিয়ার সাথে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন আমার শাল্লা ইউনিয়নেই ১৫হাজার মণ পানিতে। এরমধ্যে ৩ভাগের ১ভাগ ধান নষ্ট হবে। তিনিও কৃষকের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করবেন বলে জানান।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল মামুন বলেন উপজেলায় কৃষকের গোলার ধান কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা এখনো জানিনা। তবে এনিয়ে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে গোলার ধানের ক্ষয়ক্ষতির একটি তালিকা তৈরি করে পাঠাবেন বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় মুঠোফোনে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন





পুরাতন খবর খুঁজুন

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১