স্বপন কুমার বর্মন, বিশ্বম্ভরপুর
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রশাসন ও এলাকার সর্বস্থরের কৃষক জনতার সেচ্ছায় নিরলস শ্রমের মাধ্যমে বাধগুলো রক্ষা হয়েছে।কৃষকরা সাময়িক স্বস্থি পেয়েছে এবং হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে।গত সপ্তাহে পাহাড়ী ঢলে হাওর পাশ্ববর্তী সুরমা নদীর শাখা প্রশাখা রক্তি নদীতে ব্যাপক ভাবে পানি বৃদ্ধি পায়। অস্বাভাবিক ভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় করচার হাওরে
হরিমনের ভাঙ্গা, বেকা বাধ, ০১ নং,০২ নং,০৪ নং ও ০৫ নং পি আই সিতে এবং আঙ্গরুলী হাওরের ০৯ নং পি আই সিতে, হালির হাওর ১৭ নং ও ২২ নং পিআইসি সহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি ফাটল, ছিদ্র দেখা দিলে কৃষকদের মাঝে আতংক দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদি উর রহিম জাদিদ এর উদ্বোগে নিরলস ভাবে কাজ করে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।তিনি পাউবোর সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের,স্থানীয় সর্বস্থরের কৃষক জনতার প্রতি আহবান জানান হাওরে বাধের এ বিপদ জনক সময়ে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করার জন্য।এলাকার বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করানো হয় বাধ রক্ষায় যাওয়ার জন্য।বাধে আশংকা জনক দিনগুলোতে পাউবোর সংশ্লিষ্ট ও সর্বস্থরের কৃষক জনতা স্বেচ্ছায় দিনরাত কাজ করে সাময়িক ভাবে বাধ রক্ষা করতে সক্ষম হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদি উর রহিম জাদিদ দিনরাত বাধে ছিলেন এমনকি সেহেরীর সময় পর্যন্ত বাধে যেতে দেখা যায়।তিনি যে ভাবে উপজেলাকে দৃষ্টিনন্দন করে উপজেলার উন্নয়ন করেছেন।তেমনি হাওরে ফসল রক্ষার ব্যাপারেও প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন।
বাধ রক্ষায় উপজেলা উপজেলা পরিষদ,জন প্রতিনিধি,বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ,সুশীল সমাজের প্রতিনিধি,সাংবাদিকসহ কৃষক জনতা নিরললস ভাবে কাজ করেছেন।
বর্তমানে হাওর পার্শ্ববর্তী নদীতে পানি কিছু কমায় কৃষকদের মাঝে সাময়িক স্বস্তি ফিরে এসেছে। হাওরে কিছুকিছু এলাকায় ধান কাটাও শুরু হয়েছে। উপজেলার চান্দারগাঁও গ্রামের কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন তিনি ৭বিঘা জমির ২৮ জাতের ধান কেঠেছেন। ব্রজনাথপুর গ্রামের কুল গোবিন্দ বিশ্বাস ৮ বিঘা জমির ধান কেটেছেন। হাওরের কিছু কিছু কৃষকরা ধান কাটছেন।ধান কাটার পাশাপাশি একটা দূঃসংবাদ ও রয়েছে। আঙ্গারুলী হাওর সহ বিভিন্ন ব্লাস্ট নামক রোগে ধানের ক্ষতি হচ্ছে।ব্রজনাথপুর গ্রামের কৃষ্ণ বিশ্বাস,লক্ষীপুর গ্রামের জগন্নাথ বিশ্বাস সহ অনেকেই বলেন হাওরে জমির ধান সাদা হয়ে মরে যাচ্ছে।ধানে চাউল নেই ছিটা হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন একদিকে বাধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় অপর দিকে ব্লাস্ট রোগে ধান ক্ষতি হচ্ছে। এযেন কৃষকদের উপর মরার উপর খড়ার ঘা স্বরুপ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নয়ন মিয়া বলেন এ উপজেলায় হাওর ও হাওর বহির্ভূত মোট ১০ হাজার ৬শত হেক্টের জমিতে এ বছর বোর ধান চাষাবাদ হয়েছে। হাওরের বাধ ঝুকি মধ্যে ছিল বর্তমানে অনেকটাই ভালো আছে। হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৫৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আমরা পরামর্শ দিচ্ছি দ্রুত ধান কাটার জন্য।
ব্লাস্ট রোগের ব্যাপরে তিনি বলেন আবহাওয়ার কারণে ব্লাস্ট রোগ হয়। কৃষকদেরকে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে জরুরী ভাবে প্রতিষেধক ঔষুধ ছিটানোর জন্য।
পাউবোর দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী মনসুর রহমান বলেন পাউবোর পাশাপাশি কৃষক জনতার সহযোগিতায় বাধ মোটামুটি ভাবে ভালো
আছে। বাধ সুরক্ষায় কাজ চলমান রয়েছে। ইতি মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন বাধ গুলোতে পাউবোর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, অন্যান্য প্রতিনিধি বৃন্দ ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এড.পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বিভিন্ন বাধ পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, করচার হাওর,আঙ্গারলী হাওর সহ বিভিন্ন বাধ ঝুকির মধ্যে ছিল।পাউবোর সংশ্লিষ্ট সহ এলাকার স্থানীয় কৃষক জনতা আমরা স্থানীয় কৃষক জনতা সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ,জন প্রতিনিধি ও সর্বস্থরের জন সাধারনের সহযোগিতায় বাধ রক্ষা করেছি বর্তমানে অনেকটাই নিরাপদ রয়েছে।তিনি বলেন, বাধের কাজ চলমান আছে।বাধ রক্ষায় প্রয়োজানীয় কাজ করেছি এবং হাওরে দ্রুত ধান কাটার জন্য কৃষকদেরকে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি।
কমেন্ট করুন