স্বপন কুমার বর্মন,বিশ্বম্ভরপুর
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বম্ভরপুরে শান্তি পূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে ত্রিমোহনী সার্বজনীন পূজায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৫অক্টোবর) উপজেলার মোট ৩০ টি মন্দিরেই বিজয়া দশমীর পূজা শেষে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করা হয়। সকালে বিজয়া দশমীর পূজা সম্পন্ন করেই বিসর্জনের জন্য মন্দির গুলোতে প্রস্তুতি চলে।দুপুর দুইটার মধ্যেই সবকটি মন্দিরেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ,উপজেলা প্রশাসন, থানার পুলিশ প্রশাসন ও প্রতিটি মন্দির কমিটির সমন্বয়ে সুন্দরভাবে ও সময় মতো বিসর্জন করা হয়। বিদ্যুতের লোডশেডিং থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক অবস্থা ভালো ছিলো। তবে নবমীতে মঙ্গলবার রাত ১১ টায় ফতেপুর ইউনিয়নের নয়াবারঙ্কা গ্রামে ত্রিমোহনী সার্বজনীন পূজা মন্দিরে উক্ত গ্রামের রামচরণ দাসের ছেলে হরিজন দাস জেনারেটরে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। তাছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি ভালো ছিলো।সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, থানা পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি,বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সরকারি কর্মকর্তা,সুধীজন পূজামন্দিরগুলো পরিদর্শন করেন।অষ্টমী ও নবমীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদিউর রহিম জাদিদ উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেন।তার সফরসঙ্গী ছিলেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসেন,উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রুমান, প্রেসক্লাব সভাপতি স্বপন কুমার বর্মন। অপরদিকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সফর উদ্দীন উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেন এবং ভক্তবৃন্দের সাথে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বিশ্বম্ভরপুরে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিটি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে,তবে বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণে কিছু সমস্যা হয়েছে।
মঙ্গলবার(৪ সেপ্টেম্বর) শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নবমী পূজার কর্মসূচির মধ্যে পূজা অর্চনা, প্রসাদ বিতরণ, আরতী প্রতিযোগিতা ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় পূজা মন্দির গুলোতে বেশকিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় প্রতিটি মন্দিরেই জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।উপজেলার কেন্দ্রীয় পূজা মন্দির কৃষ্ণনগর সার্বজনীন পূজা মন্দিরে, কাইতকোণা পূজা মন্দির, লালারগাও পূজা মন্দির,৷ পলাশ মাজাইর মন্দির,শক্তিয়ারখলা পূজা মন্দির, ফতেপুর মিলনসঙ্গ পূজা মন্দির সহ বেশ কয়েকটি মন্দিরে দর্শনার্থীদের ভীড় ছিলো। প্রতিটি মন্দিরে দেশ জাতি তথা বিশ্বশান্তি কামনায় প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদিরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা পূজা মন্দির গুলো পরিদর্শন করেন। তাছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেত্রী বৃন্দ বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য যে ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত উপজেলার মোট ৩০ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসবের পূজা অর্চনা ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ষষ্ঠী পূজার রাতে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টিতে কয়েকটি মন্দিরের প্যান্ডেলের ক্ষতিসহ কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়। উপজেলা সদর কৃষ্ণনগর পূজামন্দিরের গেইট, প্যান্ডেল ঝড়ে বেশ ক্ষতি হয়েছিলো৷ পরদিন তার সংস্কার করে পূজার পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। এছাড়াও, উপজেলার পীয়ারিনগর, লক্ষ্মীপুর সহ কয়েকটি মন্দিরে ঝড়ে কিছু ক্ষতি হয়। নবমী পূজা পর্যন্ত বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিগণ পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন। সপ্তমী পূজার দিন উপজেলা সদর,কৃষ্ণনগর পূজামন্দিরে সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ জয়নাল আবেদীন পরিদর্শনকালে ভক্তবৃন্দের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।এসময় থানার অফিসার ইন চার্জ মোঃ ইকবাল হোসেন সহ সুনামগঞ্জ ডিবি অসি সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাও ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অষ্টমীর দিন (সোমবার) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাদিউর রহিম জাদিদ উপজেলা সদর কৃষ্ণনগর পূজা মন্দির, কাইতকোণা পূজা মন্দির, পলাশ মাজাইর পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন এবং ভক্তবৃন্দের সাথে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় সঙ্গে ছিলেন বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রুমান, প্রেসক্লাব সভাপতি ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার বর্মন। তাছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেত্রীবৃন্দ উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্দির পরিদর্শন করেন। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বেনজির আহমদ মানিক সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন।
সার্বিক অবস্থায় বিশ্বম্ভরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
কমেন্ট করুন