তাহিরপুর(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ-
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় সরকারি জব্দকৃত বাংলা কয়লা পাচার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার উপজেলার সীমান্তবর্তী বাশতলা, জঙ্গলবাড়ি, কলাগাও, চারাগাও এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এ সময় সরকারী ৫হাজার ৮শত মে.টন জব্দকৃত বাংলা কয়লার মধ্যে প্রায় ২ হাজার মে. টন বাংলা কয়লা পাচার হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য গত ২৮ অক্টোবর খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি),সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের কয়েক জন কর্মকর্তা সীমান্ত এলাকার চারাগাও,কলাগাও, বাশতলা এবং জঙ্গলবাড়ি এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।এসময় বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনায় স্তুুপিকৃত আকারে থাকা বাংলা কয়লা জব্দ করেন তারা।একইদিন রাতে সেই বাংলা কয়লা নিলামের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন যাতে ৩১ অক্টোবর উন্মুক্ত নিলামের জন্য দিন ধার্য করা হয়।কিন্তু হাইকোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারনে নিলামটি স্থগিত করা হয়। স্থগিতাদেশে আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে বিএমডিকে নিলামের কারন দর্শানোর জন্য বলা হয় এবং মামলাটি নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগামী তিনমাস মালগুলো না সরানোর জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সীমান্তের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীও ভারতীয় চোরাই কয়লা পাচারকারীরা আজ সকাল থেকেই প্রকাশ্যে দিনের বেলায় এই জব্দকৃত কয়লা চারাগাও বিজিবি ক্যাম্পের সম্মুখ দিয়ে প্রায় কয়েকশো ট্রলি ভর্তি করে পাটলাই নদীতে নিয়ে যায়।সেখানে অপেক্ষমান প্রায় ৭/৮টি ষ্টিল বডির বাল্কহেড নৌকায় কয়লাগুলো লোড করা হয়।খোজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাও গ্রামের চিহ্নিত চোরাকারবারি কলাগাও গ্রামের সাইদ আলীর ছেলে সবুজ মিয়া,জয়দর আলীর ছেলে পুলিশের সোর্স পরিচয়ধারী নজরুল ইসলাম,কলাগাও বাজার কমিটির সভাপতি জামাল হোসেন, ইমরুল মিয়া ও লাকমা গ্রামের রাজু মিয়ার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট সকাল থেকেই বিজিবি ক্যাম্পের সামনে দিয়ে ট্রলিযোগে সমসার হাওরে নিয়ে যায়,সেখান থেকে ছোট নৌকায় করে শ্রীপুর বাজারের পাশে পাটলাই নদীতে বড় ষ্টীলবডির বাল্কহেড নৌকায় তুলে দেয়।
এসময় চারাগাও বিওপি কমান্ডারকে অবগত করা হলে তিনি উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে বলে ফোন কেটে দেন। পরে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করা হলে প্রায় বেলা ১১ টার সময় ট্যাকেরঘাট পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এ এস আই খাইরুল ইসলাম গিয়ে দুইটি ট্রলিতে থাকা ৬০-৭০ বস্তা কয়লা আটক করে ট্রলি দুইটি ছেড়ে দেন।কিন্তু কয়লা পাচারের সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।
তিনি জানান, সরকারী জব্দকৃত কয়লা পাচারের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাচালানীরা কয়লা রেখে পালিয়ে যায়।পরবর্তীতে আবার তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেনের দিক নির্দেশনায় পাটলাই নদীতে অভিযান চালিয়ে একটি ষ্টিলবডির বাল্কহেড নৌকা আটক করা হয়। অন্য নৌকাগুলো মাল নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।এব্যাপারে কলাগাও বনিক সমিতির সভাপতি জামাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলা কয়লা পাচারের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমি বাংলা কয়লা পাচারের বিষয়ে জানিনা, তবে রাতে চোরাই পথে আসা বোঙ্গার কয়লাটা আমি দুটি নৌকা লোড করে নিয়েছিলাম।
তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, আটককৃত ষ্টিলবডি নৌকায় আনুমানিক ৬০/৭০ মে.টন কয়লা হতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশন(ভূমি) আসাদুজ্জামান রনি জানান, আটককৃত কয়লা এবং এর সাথে জড়িতদের বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কমেন্ট করুন