স্টাফ রিপোর্ট :-তাহিরপুরে নদীতে টোলের নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে শনিবার থেকে কয়লাচুনাপাথর বিক্রয় এবং পরিবহন বন্ধ করে ধর্মঘট পালন করছেন দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শুল্কস্টেশন বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলীর প্রায় ৭’শ আমদানীকারক। তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের আহ্বানে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। বিক্রয় ও পরিবহন বন্ধ থাকায় তিনটি শুল্ক স্টেশনেই তৈরি হয়েছে সুনসান নিরবতা।বেকার হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। আজ রবিবার এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসির নিকট লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী শুল্কস্টেশনের প্রায় সাতশ’ আমদানীকারক চুনাপাথর ও কয়লা পাটলাই নদী দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠান। পাটলাই নদীর ডাম্পের বাজার নৌকাঘাটে ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা বাল্কহেডে মালামাল লোড দেবার সময় বিআইডব্লিউটিএ এবং স্থানীয় তহশিল অফিসের পক্ষ থেকে টোল আদায় করেন কিছু লোক।ব্যবসায়ীদের দাবি এখানে নির্ধারিত টোলের চেয়ে বহুগুণ বেশি টাকা আদায় করা হয়, এ কারণে এই শুল্ক স্টেশনের ক্রেতা কমে যাচ্ছে, নৌ-যানও এই পথ দিয়ে কম আসছে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না।
চাঁদাবাজির শিকার বাজিতপুরের নৌ-শ্রমিক জিল্লুর রহমান, আলম মিয়া ও মো. ইব্রাহিম মিয়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো.শফিকুল ইসলাম বলেছেন, তারা জুলুমের শিকার। অন্যায়ভাবে দাবি করা টাকা না দিলে শারিরিক নির্যাতনের শিকার হন তারা। এই অবস্থা চলতে থাকলে এদিকে আর নৌকা নিয়ে আসবেন না তারা।
সীমান্তের কৈলসাদিঘী গ্রামের কয়লা শ্রমিক মাসুক মিয়া বললেন, এখানে কাজ করেই সাজনের সংসারের জীবিকা আমাদের।কাজ বন্ধ থাকলে পরিবারের সকলের খাবার জুটবে কীভাবে এই চিন্তায় পড়েছি।
তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার বললেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে। নিয়মনীতির বালাই না করে চলন্ত অবস্থায় টোলের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে। যখন যেমন মন চায় টাকা দাবি করা হয়। না দিলে নৌ-শ্রমিকদের মারধরও করা হয়। এসব অত্যাচারে শুল্কস্টেশন গুলোতে ক্রেতা কমছে। পরিবহনের নৌকাও এই পথে আসতে চায় না। উপায় না পেয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিক্রয় ও পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। রবিবার সমিতির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও ও ওসিকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছ।স্বারক লিপি প্রদান কালেকালে উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হজী আলকাছ উদ্দিন খন্দকার,সাবেক আহবায়ক শামসুল হক,তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক অমল কর,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জিয়াউল হক,হাজী ফরিদ গাজী,হাজী ছিদ্দিক মিয়া, জাহের আলী,হাজী নুর মিয়া, আবুল খায়ের,হাছান মিয়া,বাগলী সমিতির সভাপতি খালেক মোশাররফ, সাবেক সভাপতি শাহজাহান খন্দকার,মোঃ নুরুজ্জামান, আলী হোসেন সহ আরও অনেকে
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বললেন, বিআইডব্লিউটিএ ও তহসিল অফিস দুই পক্ষকেই বলে দেওয়া হয়েছে বিধি মোতাবেক টোল আদায় করতে হবে। অন্যায়ভাবে কারো কাছ টাকা আদায় করা যাবে না।এই বিষয়ে কয়লা আমদানীকারক সমিতির সঙ্গে কথা হয়েছে,আমরা তাদের সঙ্গে বসবো।
কমেন্ট করুন