সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ সুনামগঞ্জ ৪ আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত সাংসদ পীর ফজলুল হক মিসবাহমহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে দাবী করেছিলেন পত্রিকা বন্ধের ক্ষমতা জেলা প্রশাসকদের হাতে ফিরিয়ে না দেয়ার জন্য। সাংবাদিক ও জনগনের দাবীর মুখে সরকার এই প্রস্তাব থেকে সরে আসছে।আইন সংশোধন করে সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধের ক্ষমতা জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) হাতে দেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু
বৃহস্পতিবার তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ইনু বলেন, প্রিন্টিং প্রেসেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস (ডিক্লারেশন অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন) অ্যাক্ট সংশোধন করে সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধের ক্ষমতা ডিসিদের হাতে দেয়া হচ্ছে বলে যে কথা উঠেছে তা সঠিক না। তিনি বলেন, “ডিসিদের হাতে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের ক্ষমতা দেয়া নয়, ১৯৭৩ অ্যাক্টকে যুগোপযোগী করার বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ নয়, অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।”“ডিসিদের হাতে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের ক্ষমতা দেয়ার বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় মাথা ঘামাচ্ছে না। আমরা গোপন কিছু করি না, গোপন কিছু করবও না।”পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের ক্ষমতা চেয়ে গত ১০ জুলাই ডিসি সম্মেলনে একটি প্রস্তাব রাখা হয়েছিলো।কিন্তু সম্মেলনে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে তখন জানিয়েছিলেন তথ্যমন্ত্রী। এর আগে ৯ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনেও তিনি বলেছিলেন, “এই মুহূর্তে আমরা প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস অ্যাক্ট নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না, কোনো আলোচনা করছি না।”কোনো নতুন আইন বা আইন সংশোধনের আগে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনের খসড়া তৈরি করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে এরপর খসড়া চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান ইনু।
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের ক্ষমতা ডিসিদের হাতে দেয়ার বিষয়ে মতামত দিলেও মন্ত্রণালয় তা আমলে নেয়নি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “ডিএফপি যে সুপারিশ পাঠিয়েছিল তা বিভ্রান্তমূলক। সেটি কোনো গৃহীত বা অনুমোদিত প্রস্তাবও নয়। তাই বিদ্যমান আইনটি ইংরেজিতে যুগোপযোগী করে পুনরায় পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।”ইনু বলেন, “ডিএফপির খসড়ায় সংবাদপত্রে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বা রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হলে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের ক্ষমতা ডিসিদের হাতে দিতে বলা হলেও একই সঙ্গে তা কার্যকরের বিষয়টি আদালত বা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছিল। প্রস্তাবগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, প্রস্তাবে দ্বৈততা আছে।”এ ধরনের আইনের খসড়া তৈরির জন্য ডিএফপি স্বীকৃত কমিটি নয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি আছে। তারা এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া চূড়ান্ত করবে। “যেহেতু অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বের কমিটির এ বিষয়ে কিছু করেনি তাই আমিও বিষয়টি অবগত ছিলাম না। পত্রিকার এনিয়ে লেখালেখি হওয়ার পরে আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি।” সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী এ বিষয়ে যারা সোচ্চার ও সতর্ক ছিলেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, প্রেসেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস অ্যাক্টের আলোকে ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০০’র বেশি পত্রিকার ডিক্লারেশন দেয়া হয়েছে।
কমেন্ট করুন